জার্মানিতে চলছে তীব্র গ্যাস সঙ্কট। হু হু করে বাড়ছে জ্বালানির দাম। অন্যদিকে বইতে শুরু করেছে শীতের বাতাস। এই পরিস্থিতি ঘর গরম করার হিটার নিয়ে শঙ্কায় রয়েছে দেশটির নাগরিকরা। শীতের সময়টা গরমের দেশে কাটাতে বিদেশ যেতে চাচ্ছেন হাজার হাজার জার্মান। কর্মক্ষেত্র থেকে দীর্ঘমেয়াদি ছুটি নিতে শুরু করেছেন তারা। বুক করে নিচ্ছেন গরমের দেশের ট্যুর প্যাকেজ।
বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে আনাদোলু এজেন্সি।
এতে জানানো হয়, জ্বালানির উচ্চ খরচ এড়াতে শীতকালীন ছুটিতে যাওয়ার হিড়িক পড়েছে দেশটিতে। আর এই সুযোগ লুফে নিয়েছে দেশটির প্যাকেজড হলিডে কোম্পানিগুলো। দক্ষিণ ইউরোপীয় এবং উত্তর আফ্রিকার দেশগুলোতে সাশ্রয়ী মূল্যে লম্বা সময় থাকার প্যাকেজ অফার করছে তারা।
বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় পর্যটন সংস্থা টিইউআই-এর কমিউনিকেশনস কমিউনিকেশন ডিরেক্ট এজ ডানহাউট বলেন, ‘দীর্ঘমেয়াদী ছুটিতে যাওয়ার প্রবণতা আমরা খেয়াল করছি। শীতের মৌসুমে দীর্ঘমেয়াদী ছুটিতে যাওয়ার ব্যাপারটি ব্যতিক্রম কিছু নয়। কিন্তু এবার গ্যাসের দাম বেড়ে যাওয়ায় এর প্রবণতা বেড়ে গেছে। রোদের দেশে থাকলে গরম থাকার জন্য এতো বেশি এনার্জির দরকার হবে না। জার্মানিতে বেড়ে যাওয়া দাম তার ওপর প্রভাব ফেলবে না।’
জার্মান পর্যটক টানতে তুরস্ক, মিশর, তিউনেশিয়ার মতো গন্তব্যগুলো আকর্ষণীয় অফার করছে।
বার্লিনের নিউকোলন এলাকার দম্পতি আনা এবং পাবলো। তুরস্কে সস্তায় লম্বা ছুটি কাটানোর একোমোডেশন খুঁজতে ইতোমধ্যে ল্যাপটপে মাথা গুঁজে আছেন।
উষ্ণ শীতের সময় কাটাতে এই দম্পতির পছন্দ তুরস্কের আন্টালিয়া অঞ্চল।
আনা বলেন, ‘জীবনযাত্রার ব্যয় বিস্ফোরিত হচ্ছে। আমরা এখন এমন এক পর্যায়ে এসে ঠেকে গেছি যে শীতের সময় গরম থাকার পয়সা জোগাড় করার কথাও কল্পনা করতে পারছি না। অথচ ক্রমেই শীত ঘন হয়ে আসছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা দু’জনেই রিমোটলি কাজ করি। একেবারে নয়, অন্তত শীতের সময়টুকু বাইরে যাওয়ার কথা ভাবছি। এমন কোথাও যেতে চাই, যেখানে আরো কম খরচে নিজেদের গরম রাখতে পারি।’
তিনি জানান, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের বিল দ্রুত সাধারণ গ্রাহকের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে।
আনা এবং পাবলো তুরস্কে থাকার খরচ জোগাড় করতে বার্লিনে তাদের অ্যাপার্টমেন্টটি সাবলেট ভাড়া দেওয়ার চেষ্টা করছেন।
আনা বলেন, ‘সাধারণভাবে বলতে গেলে তুরস্কে জীবনযাত্রার খরচ অনেক কম। আমরা কিছু বিকল্প খুঁজে পেয়েছি। সেখানে আমাদের ভালো বন্ধু আছে। ওখানকার লোকেরা বন্ধুত্বপূর্ণ। আমরা একটি রিসর্টে থাকতে পারি। সুন্দর আবহাওয়া এবং উষ্ণতার সাথে কিছু সুন্দর সময় কাটাতে পারি।’
ইউক্রেন যুদ্ধপরিস্থতিতে ইউরোপে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে রাশিয়া। এতে তীব্র জ্বালানি সঙ্কটে পড়েছে জার্মানিসহ বেশ কয়েকটি দেশ।
রাশিয়ার পদক্ষেপকে ‘গ্যাস যুদ্ধ’ বলে অভিযোগ করেছে আমেরিকা। তবে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণেই গ্যাস সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বলে শুরু থেকেই দাবি করে আসছে মস্কো।