ভূগর্ভস্থ কয়লার আগুন বিপর্যস্ত করে তুলেছে জিম্বাবুয়ের খনির শহর হোয়াঙ্গ-এর জনজীবন। বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে আল জাজিরা।
দশ বছর বয়সি সিম্বা মুলেজু, মায়ের ভুট্টা ক্ষেত থেকে গবাদি পশু তাড়িয়ে বাড়ির দিকে যাচ্ছিল।
হঠাৎ তার পায়ের নিচ থেকে মাটি সরে যায়। মাটির নিচে জ্বলন্ত কয়লায় পড়ে যায় সে। পরে তাকে উদ্ধার করা গেলেও স্থায়ীভাবে বিকৃত হয়ে যায় শরীরের অঙ্গ।
খনির শহর হোয়াঙ্গ-এ এমন ঘটনা নিয়মিতই ঘটছে। গত পাঁচ বছর ধরে প্রধান সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে কয়লার আগুন।
একটি এলাকায় মাটির নিচে আগুন জ্বলছে ১৫ বছর ধরে।
২০২১ সালের শেষের দিকে বাড়ির কাছাকাছি একটি ঝোপে বসে বিশ্রাম নিচ্ছিলো। পরে মাটি সরে গিয়ে সেও আগুনে পড়েছিলো।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
হোয়াঙ্গ শহরে ৪০ হাজার লোকের বসতি।
গ্রেটার হোয়াঞ্জ রেসিডেন্ট ট্রাস্ট সমন্বয়কারী ফিদেলিস চিমা বলেন, ভূগর্ভস্থ এবং ভ’মির উপর দাবানলে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এক ডজনেরও বেশি লোক আহত হয়েছে।
কয়লা খনির মালিকানাধীন কোম্পানিগুলো এসব বিষয়কে গুরুত্ব দিচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন তিনি।
গ্লোবাল ফরেস্ট ওয়াচ এর একটি ওপেন-সোর্স মনিটর অনুসারে পৃথিবীজুড়ে, পৃথিবীর নীচে নোংরা জ্বালানীতে শত শত আগুন কম এবং ধীর গতিতে জ্বলছে। এগুলো কয়েক দশক ধরে ধোঁয়া দিচ্ছে।
গ্লোবাল ফরেস্ট ওয়াচ বলছে, ‘এই আগুনগুলো কয়লার আগুন। পৃথিবীর ভূত্বকের মধ্যে কয়লার একটি স্তর প্রজ্বলিত হলে এগুলো ভ’গর্ভস্থ হয়। আগুনের লক্ষণ না থাকায় এগুলো সনাক্ত করা কঠিন। এমনকি নির্বাপণ করাও কঠিন।’
কয়লা ডাম্পিং সাইটগুলোতে যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থার অভাব রয়েছে। এতে দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে শিশুরা। মৃত্যুর হুমকিতে পড়ছে। অঙ্গ-প্রতঙ্গ বিকৃত হয়ে যাচ্ছে।
স্থানীয় কাউন্সিলর কসমাস নিওনি বলেন, ‘পনেরো বছরেরও বেশি সময় ধরে মাটির নিচে থাকা আগুন তাড়া করে বেড়াচ্ছে মানুষদের। আমাদের সম্প্রদায় নিরাপদ থাকবে কি না, জানা নেই।’